গার্মেন্টস ফিনিশিং এর কাজ কি? বিস্তারিত What is the Job of Garment Finishing?
গার্মেন্টস ফিনিশিং এর কাজ কি? বিস্তারিত What is the Job of Garment Finishing?
![]() |
"ফিনিশিংই গার্মেন্টসের শেষ ছোঁয়া—পরিপাটি, প্রস্তুত, পরার জন্য একদম পারফেক্ট!" |
সুতা কাটা (Thread Trimming):
সেলাইয়ের পর পোশাকের বাইরে বেরিয়ে থাকা অতিরিক্ত সুতোগুলো কেটে ফেলা হয়। সুতা কাটা (Thread Trimming) হল গার্মেন্টস ফিনিশিং প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যেখানে পোশাকের সেলাইয়ের পর অংশে ঝুলে থাকা বা অতিরিক্ত সুতাগুলো কেটে ফেলা হয়।
সুতা কাটার উদ্দেশ্য:
পোশাকের বাইরের অংশে ঝুলে থাকা সুতা পণ্যের সৌন্দর্য নষ্ট করে। তা কেটে দিলে পোশাকটি পরিপাটি ও আকর্ষণীয় দেখায়। অতিরিক্ত সুতা থাকলে ক্রেতা পোশাকের মান নিয়ে সন্দেহ পোষণ করতে পারে। সুতা ঠিকভাবে না কাটা থাকলে তা নিম্নমানের পণ্য বলে বিবেচিত হয়। বিদেশি ক্রেতারা পোশাকের ফিনিশিংয়ে সর্বোচ্চ মান প্রত্যাশা করে। সুতা না কাটলে তা রিজেকশন বা ক্লেমের কারণ হতে পারে।
ট্রেইন্ড অপারেটর ছোট কাঁচি ব্যবহার করে হাতেই সুতা কেটে থাকে। কিছু বড় ফ্যাক্টরিতে স্বয়ংক্রিয় সুতা কাটার মেশিন ব্যবহার করা হয়, যেটি দ্রুত এবং নিখুঁতভাবে কাজ করে।
সুতা কাটার সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হয়:
শুধু ঝুলে থাকা সুতা কাটতে হবে, সেলাইয়ের অংশ যেন কাটা না পড়ে, প্রতিটি অংশ (হাতা, গলা, কোমর, সাইড সেলাই) ভালোভাবে চেক করতে হবে, একাধিকবার পর্যবেক্ষণ করে নিশ্চিত হতে হবে—সব সুতা ঠিকভাবে কাটা হয়েছে কিনা এই ছোট কাজটি হলেও, সুতা কাটা পোশাকের মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একটি সুন্দর, পরিষ্কার এবং ফিনিশড গার্মেন্টসই ব্র্যান্ডের মান এবং ক্রেতার সন্তুষ্টি নির্ধারণ করে।
2. চেকিং (Checking):
পোশাকে কোনো ত্রুটি আছে কিনা তা খুঁটিয়ে দেখা হয়—যেমন: সেলাই ভূল, দাগ, ছেঁড়া কাপড়, অসমান মাপ ইত্যাদি। চেকিং (Checking) গার্মেন্টস ফিনিশিং প্রক্রিয়ার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যেখানে প্রতিটি পোশাক খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হয়—সেগুলোর মান, সেলাই, ফিনিশিং, ট্যাগিং ও অন্যান্য দিক থেকে কোনো ত্রুটি আছে কিনা।
চেকিং-এর উদ্দেশ্য:
পোশাকে সেলাই, কাপড়ের দাগ, ভিন্ন রঙ, মাপের ভুল, বোতাম/চেইন সমস্যার মতো ত্রুটি আছে কিনা দেখা হয়। অর্ডার অনুযায়ী স্টাইল, ডিজাইন, ট্যাগ, লোগো সব কিছু ঠিকঠাক আছে কি না তা যাচাই করা হয়। এক্সপোর্ট বা বাজারে পাঠানোর আগে ত্রুটিগুলো ধরতে পারলে পরে ফেরত আসার ঝুঁকি কমে।
📋 চেকিং-এর ধরণ:
সেলাই চলাকালীন প্রতিটি লাইনে ত্রুটি ধরা হয়। এতে সমস্যা দ্রুত সমাধান করা যায়। একটি পোশাক পুরো সেলাই হয়ে গেলে তা ইনস্পেকশন টেবিলে এনে চেক করা হয়। ফিনিশিং শেষে, প্যাকিংয়ের আগে একবার শেষবারের মতো পুরো পোশাক খুঁটিয়ে দেখা হয়।
চেকিংয়ের সময় যে বিষয়গুলো দেখা হয়:
-
সেলাই সোজা ও মজবুত হয়েছে কি না
-
থ্রেড ঝুলে আছে কি না
-
বোতাম বা চেইন ঠিকভাবে লাগানো হয়েছে কি না
-
রং মিলছে কিনা (Shade variation)
-
কাপড়ে দাগ, ছেঁড়া বা ছিদ্র আছে কি না
-
সাইজ ট্যাগ, কেয়ার লেবেল, ব্র্যান্ড ট্যাগ সঠিকভাবে বসানো হয়েছে কি না
-
মাপ ও ফিটিং অর্ডার অনুযায়ী আছে কিনা
চেকিং-এর গুরুত্ব:
-
ক্রেতার কাছে কোম্পানির ভাবমূর্তি রক্ষা হয়
-
রি-ওয়ার্ক এবং ওয়েস্টেজ কমে
-
এক্সপোর্ট রিজেকশন বা ক্লেমের ঝুঁকি হ্রাস পায়
-
পোশাকের গুণমান বজায় থাকে
3. আইরনিং বা প্রেসিং (Ironing/Pressing):
পোশাককে সুন্দর, ঝকঝকে ও আকৃতি ঠিক রাখতে হিট প্রেস বা স্টিম আয়রনের মাধ্যমে প্রক্রিয়া করা হয়। আইরনিং বা প্রেসিং (Ironing/Pressing) গার্মেন্টস ফিনিশিং প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যেখানে তৈরি পোশাককে চূড়ান্তভাবে পরিপাটি, ঝকঝকে ও আকর্ষণীয় রূপ দেওয়ার জন্য গরম ইস্ত্রি বা প্রেসিং মেশিনের সাহায্যে চেপে বা টেনে সোজা করা হয়।
আইরনিং/প্রেসিং এর উদ্দেশ্য:
সেলাই ও প্যাকিংয়ের আগে কাপড়ে যে ভাঁজ বা কুঁচকানো থাকে, তা প্রেস করে সোজা করা হয়। গরম প্রেস করার ফলে পোশাকটি স্মার্ট, ফিনিশড ও বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। অনেক সময় গার্মেন্টসের সঠিক ফিট এবং আকৃতি প্রদর্শনের জন্য বিশেষভাবে ফর্ম প্রেসিং করা হয়।
প্রেসিং-এর ধরণ:
সাধারণভাবে ইলেকট্রিক বা স্টিম আয়রন দিয়ে হাতের মাধ্যমে চেপে চেকিং ও ফিনিশিং করা হয়। গরম বাষ্প ব্যবহার করে ভাঁজগুলো দূর করা হয়, যা কাপড়কে কোমল রাখে। জ্যাকেট, প্যান্ট বা শার্টের নির্দিষ্ট ফর্ম অনুযায়ী ফিনিশিং করা হয় মেশিনে।
আইরনিং-এর সময় যা খেয়াল রাখতে হবে:
-
সঠিক তাপমাত্রা ব্যবহার করতে হবে, কাপড়ের ধরণ অনুযায়ী
-
প্রিন্ট/এম্ব্রয়ডারি অংশে সরাসরি প্রেস না করা
-
ট্যাগ বা লেবেল গলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাই সেগুলো থেকে দূরে রাখতে হবে
-
আয়রন করার পর পোশাকে কোনো দাগ বা দাহ যেন না পড়ে
-
বোতাম বা প্লাস্টিক অংশে অতিরিক্ত তাপ প্রয়োগ না করা
আইরনিং-এর গুরুত্ব:
-
পোশাকটি প্রেজেন্টেবল ও মানসম্মত দেখায়
-
প্যাকিং সহজ হয়
-
ক্রেতার কাছে পণ্যের মানের ইমপ্রেশন বাড়ায়
-
গার্মেন্টস শো-রুম বা এক্সপোর্টে রিজেকশন কমায়
4. মাপ চেক (Measurement Check):
পোশাকের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, হাতা, গলা ইত্যাদি মাপ কোম্পানির নির্ধারিত স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী আছে কি না তা পরীক্ষা করা হয়। মাপ চেক (Measurement Check) গার্মেন্টস ফিনিশিং প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যেখানে প্রতিটি তৈরি পোশাকের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, হাতার মাপ, কোমরের মাপ ইত্যাদি নির্ধারিত মাপ অনুযায়ী ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করা হয়।
মাপ চেক করার উদ্দেশ্য:
-
ক্রেতার নির্ধারিত স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী পোশাক তৈরি হয়েছে কিনা নিশ্চিত করা।
ফিটিং এবং সাইজে সমস্যা থাকলে আগেই চিহ্নিত করে সংশোধন করা।
-
একই স্টাইলে সব গার্মেন্টসের মধ্যে ইউনিফর্মিটি বজায় রাখা।
-
এক্সপোর্ট রিজেকশন এবং কাস্টমার ক্লেম এড়ানো।
মাপ চেকিংয়ের সময় যে বিষয়গুলো দেখা হয়:
-
পোশাকের Front Length (সামনের দৈর্ঘ্য)
-
Back Length (পেছনের দৈর্ঘ্য)
-
Chest/Bust Width (বুকে পরিমাপ)
-
Shoulder Width (কাঁধের মাপ)
-
Sleeve Length (হাতার দৈর্ঘ্য)
-
Armhole (হাতার গলা)
-
Waist (কোমর)
-
Hip (নিতম্ব)
-
Bottom Opening
-
Neck Width & Depth
-
Collar Size (যদি থাকে)
মাপ চেক করার পদ্ধতি:
-
ক্রেতার দেওয়া Measurement Sheet অনুযায়ী নির্দিষ্ট মাপ ফলো করা হয়।
Flat Measurement পদ্ধতিতে পোশাকটিকে টেবিলে সমানভাবে বিছিয়ে মাপ নেওয়া হয়।
-
সঠিক স্কেল বা measuring tape ব্যবহার করে প্রতিটি অংশ আলাদাভাবে মাপা হয়।
-
Tolerance (সহনশীলতা) সীমার মধ্যে মাপ থাকছে কিনা তা যাচাই করা হয়।
-
মাপে সমস্যা থাকলে চিহ্নিত করে Rework বা Rejection লিস্টে রাখা হয়।
Tolerance Level কী?
Tolerance হলো নির্ধারিত মাপের চেয়ে সামান্য বেশি বা কম হওয়া গ্রহণযোগ্য সীমা। যেমন, যদি বুস্ট মাপ 40cm হয় এবং টলারেন্স ±0.5cm হয়, তাহলে 39.5cm থেকে 40.5cm এর মধ্যে হলে তা গ্রহণযোগ্য ধরা হয়।
মাপ চেক করার গুরুত্ব:
-
ফিটিং সমস্যা কমে
-
পণ্যের মান এবং গ্রাহকের সন্তুষ্টি বাড়ে
-
ব্র্যান্ড ইমেজ রক্ষা হয়
-
এক্সপোর্ট রিজেকশন ও ক্ষতির সম্ভাবনা কমে
5. লেবেল ও ট্যাগ লাগানো (Label & Tag Attachment):
ব্র্যান্ড ট্যাগ, কেয়ার লেবেল, প্রাইজ ট্যাগ, সাইজ ট্যাগ ইত্যাদি সঠিক স্থানে সেলাই বা লাগানো হয়। লেবেল ও ট্যাগ লাগানো (Label & Tag Attachment) গার্মেন্টস ফিনিশিং প্রক্রিয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যেখানে প্রতিটি পোশাকে নির্ধারিত ব্র্যান্ড, সাইজ, কেয়ার নির্দেশনা, মূল্য ও বারকোডসহ বিভিন্ন ট্যাগ ও লেবেল সঠিকভাবে লাগানো হয়।
লেবেল ও ট্যাগের ধরণ:
সাধারণত গলার পেছনে লাগানো হয়, যাতে ব্র্যান্ড পরিচিতি বোঝায়। পোশাকের মাপ বোঝানোর জন্য S, M, L, XL বা সংখ্যায় দেওয়া হয়। ধোয়া, ইস্ত্রি, শুকানোর নিয়ম ইত্যাদি উল্লেখ থাকে। ফ্যাব্রিকের উপাদান যেমন – 100% Cotton, 60% Polyester ইত্যাদি। পোশাকের মূল্য ও স্ক্যানযোগ্য বারকোড থাকে, দোকানে বিক্রির জন্য। আলাদা কাগজের ট্যাগ যা পোশাকের সঙ্গে সুতা বা প্লাস্টিক দিয়ে ঝুলিয়ে লাগানো হয়।
লেবেল ও ট্যাগ লাগানোর নিয়ম:
যেমন—মেইন লেবেল গলার অংশে, সাইজ লেবেল তার নিচে বা পাশে, কেয়ার লেবেল পাশে। প্লাস্টিক ট্যাগ গান ব্যবহার করে হ্যাং ট্যাগ ঝুলানো হয় সেলাই বা বোতাম লুপে। অনেক ব্র্যান্ড নির্দিষ্ট লেবেল ডিজাইন, ফন্ট ও কালার ব্যবহার করে।
লেবেল ও ট্যাগ লাগানোর সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে:
-
ভুল সাইজ বা ভুল ব্র্যান্ড লেবেল যেন না লাগে
-
লেবেল সেলাইয়ের মান যেন ভালো হয় (কাটা বা খোলা না থাকে)
-
ট্যাগ যেন পোশাকে দাগ না ফেলে
-
সব ট্যাগ ঠিকঠাকভাবে দৃশ্যমান ও পাঠযোগ্য হয়
-
সব পোশাকে সঠিকভাবে ট্যাগ ও লেবেল যুক্ত আছে কিনা ইনস্পেকশন করা
লেবেল ও ট্যাগ লাগানোর গুরুত্ব:
-
ব্র্যান্ড পরিচিতি বজায় থাকে
-
গ্রাহক সঠিক সাইজ ও পরিচর্যার নির্দেশনা পান
-
রিটেইল বিক্রিতে সহায়তা করে (বারকোড/দাম)
-
এক্সপোর্ট শিপমেন্টে অর্ডার অনুযায়ী লেবেলিং নিশ্চিত হয়
6. ফোল্ডিং (Folding):
পোশাক নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ভাঁজ করে সাজানো হয়, যাতে তা প্যাকেজিং এর জন্য প্রস্তুত হয়। ফোল্ডিং (Folding) হলো গার্মেন্টস ফিনিশিং প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যেখানে প্রতিটি পোশাক নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী সঠিকভাবে ভাঁজ করা হয় যাতে তা পরিবহন ও প্যাকিংয়ের জন্য প্রস্তুত থাকে।
ফোল্ডিংয়ের উদ্দেশ্য:
পোশাককে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা।কম জায়গায় যত্নসহকারে সংরক্ষণ করা। প্যাকিংয়ের সময় সাইজ ও স্টাইল অনুযায়ী সাজানো। রিটেইল স্টোরে ক্রেতার কাছে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা। ট্রান্সপোর্টেশনের সময় পোশাক যাতে কুঁচকে না যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
ফোল্ডিংয়ের ধরণ:
সাধারণত টেমপ্লেট ব্যবহার করে হাতে হাতে গার্মেন্টস ফোল্ড করা হয়। কিছু ফ্যাক্টরিতে হালকা মেশিন ব্যবহার করে ফোল্ডিং প্রক্রিয়া করা হয়। বড় বড় উৎপাদন ইউনিটে স্বয়ংক্রিয় মেশিনে গার্মেন্টস ভাঁজ হয়, নির্ধারিত মাপে।
ফোল্ডিং করার নিয়ম:
স্টাইল ও মাপ অনুযায়ী টেমপ্লেট ব্যবহার করা হয়। স্লিভ, বডি, কলার সঠিকভাবে ভাঁজ করে গার্মেন্টস একটি নির্দিষ্ট আকারে আনা হয়। ন্স, শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট – প্রতিটির ফোল্ডিং নিয়ম আলাদা হতে পারে।ফোল্ডিংয়ের পর প্রতিটি পোশাক সঠিকভাবে প্যাকিং টেবিলে পাঠানো হয়।
ফোল্ডিংয়ের সময় যেসব বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়:
-
পোশাক যেন কুঁচকে না যায় বা সেলাই দাগ না পড়ে
-
সাইজ অনুযায়ী ফোল্ডিং নিশ্চিত করা
-
প্যাকিংয়ের উপযুক্ত আকৃতি বজায় রাখা
-
ট্যাগ ও লেবেল যেন ভাঁজে লুকিয়ে না যায়
-
কোন অংশে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে
-
কোনো পোশাক যেন ভুল ফোল্ড না হয় বা উল্টো না হয়
ভুল ফোল্ডিংয়ের ক্ষতি:
-
পোশাক আকর্ষণ হারায়
-
প্যাকিং সময় বাড়ে
-
গ্রাহক বা ক্রেতার কাছে খারাপ ইমপ্রেশন তৈরি হয়
-
পোশাক কুঁচকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে
-
বড় অর্ডারে ভুল ফোল্ডিং মানে বড় সমস্যা
7. প্যাকেজিং (Packing):
ফিনিশিং এর পর পোশাক পলিথিন, বক্স বা অন্যান্য প্যাকেজিং উপকরণে প্যাক করা হয়—অর্ডারের চাহিদা অনুযায়ী। প্যাকেজিং (Packing) হলো গার্মেন্টস ফিনিশিং প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপ, যেখানে পোশাকগুলো ভাঁজ করে নির্দিষ্ট পলি ব্যাগ, বক্স বা কার্টনে সঠিকভাবে প্যাক করা হয়, যাতে সেগুলো নিরাপদে পরিবহন ও ডেলিভারি করা যায়।
প্যাকেজিং এর প্রধান উদ্দেশ্য:
-
পণ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা (ধুলা, দাগ, পানি থেকে)।
পোশাকের আকৃতি ও গুণমান বজায় রাখা।
-
শিপমেন্টে সঠিকভাবে কাউন্ট ও সাইজ অনুযায়ী সাজানো।
-
গ্রাহকের কাছে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা।
-
রিটেইল স্টোরে সহজ হ্যান্ডলিং ও ডিসপ্লের জন্য প্রস্তুত রাখা।
গার্মেন্টসে ব্যবহৃত সাধারণ প্যাকেজিং উপকরণ:
-
পলি ব্যাগ (সাইজ অনুযায়ী প্রিন্টেড বা ক্লিয়ার)
-
সিলিকা জেল (আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে)
-
সাইজ স্টিকার
-
বক্স / কার্টন
-
বারকোড / শিপিং লেবেল
-
টিস্যু পেপার / বোর্ড প্যাডিং
-
হ্যাঙ্গার (বিশেষ অর্ডারের জন্য)
প্যাকিং ধাপসমূহ:
ফোল্ডিং শেষ হওয়ার পর পোশাক নির্দিষ্ট পলি ব্যাগে ঢোকানো হয়। পলি ব্যাগে সাইজ স্টিকার লাগানো হয়। প্রতি ডজন বা প্রতি স্টাইল অনুযায়ী কার্টনে সাজানো হয়। কার্টনের গায়ে শিপিং চিহ্ন, PO নম্বর, সাইজ ব্রেকডাউন, স্টাইল কোড লেখা হয়। কার্টন সিল করে প্যালেটে সাজিয়ে ডেলিভারি/এক্সপোর্টের জন্য পাঠানো হয়।
প্যাকিংয়ের সময় যেসব বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়:
-
ভুল সাইজ যেন ভুল প্যাকেজে না যায়
-
সঠিক স্টাইল ও কালারের গার্মেন্টস যেন একসাথে থাকে
-
পলি ব্যাগ পরিষ্কার ও ছিদ্রহীন হওয়া উচিত
-
কার্টনের শক্তি ও আকার অর্ডার অনুযায়ী নিশ্চিত করা
-
শিপমেন্টের সময় পোশাক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়
-
ব্র্যান্ডের নির্দেশিত প্যাকিং স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করা
ভুল প্যাকেজিং এর ক্ষতি:
-
কাস্টমার কমপ্লেইন বা রিটার্ন
-
এক্সপোর্ট অর্ডার বাতিল বা কাটা
-
পোশাক নষ্ট বা ভাঁজে দাগ পড়া
-
ব্র্যান্ড ইমেজ ক্ষুণ্ন হওয়া