চাকরির ইন্টারভিউতে নিজের সম্পর্কে বলার টিপস Job Interview about your Self
![]() |
| ইন্টারভিউতে নিজের পরিচয়—বলুন স্মার্টভাবে, জিতুন আত্মবিশ্বাসে! |
চাকরির ইন্টারভিউতে নিজের সম্পর্কে বলার সময় (Tell me about yourself) প্রায়ই প্রার্থীকে পরীক্ষা করার জন্য দেওয়া হয় যে তারা কতটা প্রস্তুত, কতটা পেশাদার, এবং তাদের ব্যক্তিত্ব ও যোগ্যতা কিভাবে চাকরির জন্য প্রাসঙ্গিক। এখানে বিস্তারিত টিপস দেওয়া হলো:
১. সময় ও দৈর্ঘ্য ঠিক রাখুন
ইন্টারভিউতে নিজের সম্পর্কে বলার সময় ও দৈর্ঘ্য ঠিক রাখা হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল যা প্রার্থীকে সংক্ষিপ্ত, প্রাসঙ্গিক ও আত্মবিশ্বাসীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে সাহায্য করে। সাধারণভাবে, এই অংশটি ১–২ মিনিটের মধ্যে রাখতে হয়। বেশি দীর্ঘ হলে ইন্টারভিউয়ারের মনোযোগ হারাতে পারে, আর খুব ছোট হলে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে ব্যর্থ হবেন। সংক্ষিপ্ত ও ফোকাস করা বক্তব্য ইন্টারভিউয়ারের আগ্রহ ধরে রাখে। সীমিত সময়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করা দক্ষতার পরিচায়ক। পরিকল্পিত বক্তব্য সহজে বলার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস প্রদর্শিত হয়। শুরুতে নাম ও শিক্ষাগত যোগ্যতা, মধ্যভাগে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা, শেষে ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও কোম্পানিতে অবদান। রেকর্ড বা আয়নার সামনে প্র্যাকটিস করে সময় ঠিক করুন। কাজের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও অর্জন বেশি গুরুত্ব দিন, অপ্রয়োজনীয় তথ্য কম রাখুন।
২. স্ট্রাকচার ব্যবহার করুন
নিজের পরিচয় একটি স্ট্রাকচার অনুযায়ী বললে সহজ মনে হয়। প্রায়শই নিচের তিনটি অংশ ব্যবহার করা হয়: আপনার নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ও বর্তমান বা শেষ কাজের অভিজ্ঞতা।
উদাহরণ: “আমার নাম সেলিম। আমি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক করেছি এবং শেষ ৩ বছরে একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে ডেভেলপার হিসেবে কাজ করেছি।”
b. দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা
-
চাকরির সাথে সম্পর্কিত দক্ষতা ও অর্জনগুলো উল্লেখ করুন।
-
উদাহরণ: “আমি পাইথন, জাভাস্ক্রিপ্ট এবং ডেটাবেস ম্যানেজমেন্টে দক্ষ, এবং আমার শেষ প্রজেক্টে ২০% প্রোডাকশন পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করেছি।”
c. ভবিষ্যতের লক্ষ্য ও কোম্পানির সাথে মিল
-
বলুন কেন আপনি এই চাকরিতে আগ্রহী এবং কোম্পানিতে কীভাবে অবদান রাখতে পারবেন।
-
উদাহরণ: “আমি এমন একটি টিমে কাজ করতে চাই যেখানে নতুন প্রযুক্তি শিখতে পারি এবং কোম্পানির প্রোডাকশন প্রক্রিয়া আরও উন্নত করতে সহায়তা করতে পারি।”
৩. ধ্বনি ও ভাষা
ইন্টারভিউতে ধ্বনি ও ভাষা (Voice & Language) খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি প্রার্থীর আত্মবিশ্বাস, পেশাদারিত্ব ও যোগাযোগ দক্ষতাকে প্রকাশ করে।কথা যেন ধ্বনিতে ঝাপসা বা অস্পষ্ট না লাগে। ভয় বা অনিশ্চয়তা যেন শোনায় না। খুব চিৎকার না, খুব নরমও নয়। খুব দ্রুত বললে বোঝা কঠিন হবে। খুব ধীরে বললে আগ্রহ হারাতে পারে। ছোট বিরতি কথা আরও পরিষ্কার করে এবং শুনতে ভালো লাগে।
জটিল শব্দ বা বাক্য না ব্যবহার করে সংক্ষিপ্ত ও স্পষ্ট বাক্য ব্যবহার করুন। ঘরোয়া ভাষা বা slang ব্যবহার করবেন না। ভুল শব্দ বা ব্যাকরণে আত্মবিশ্বাস কমে যায়। নিজের কথা রেকর্ড করুন, কোথায় গতি বেশি বা শব্দ অস্পষ্ট তা ঠিক করুন।
আয়নার, মুখের অভিব্যক্তি এবং ভয়েস একসাথে দেখার সুযোগ দেয়।কথাকে স্বাভাবিক ও প্রফেশনাল রাখে। স্পষ্ট ও আত্মবিশ্বাসী ভয়েস ব্যবহার করুন। খুব দ্রুত বা খুব ধীরভাবে কথা বলবেন না। প্রয়োজনে হালকা হাসি বা বন্ধুত্বপূর্ণ টোন ব্যবহার করতে পারেন।
৪. ব্যক্তিগত তথ্য সীমিত রাখুন
-
ব্যক্তিগত জীবন খুব বেশি প্রকাশ করবেন না।
-
শুধুমাত্র সংক্ষিপ্ত তথ্য যেমন আগ্রহ, হবি বা পেশাগত সৃজনশীলতা উল্লেখ করতে পারেন।
উদাহরণ:
“আমি বই পড়তে এবং কোডিং চ্যালেঞ্জ সমাধান করতে ভালোবাসি। এটি আমাকে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।”
৫. প্রস্তুতি ও প্র্যাকটিস
-
আত্মবিশ্বাসে বলার জন্য আয়না সামনে প্র্যাকটিস করুন।
-
বন্ধুর সাথে বা রেকর্ড করে শোনার মাধ্যমে ভুল ধরুন।
৬. ভুল এড়ানোর টিপস
-
কাজের সাথে সম্পর্কহীন তথ্য না বলুন।
-
নেতিবাচক বা অভিযোগপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করবেন না।
-
হঠাৎ করে মনে করেই না, সংক্ষিপ্ত ও পরিকল্পিত বলুন।
সংক্ষেপে সিকোয়েন্স:
পরিচয় → শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা → দক্ষতা → অর্জন → ভবিষ্যৎ লক্ষ্য → কোম্পানিতে অবদান
