বাংলাদেশের জাতীয় চারুশিল্পী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন জীবন

বাংলাদেশের জাতীয় চারুশিল্পী  শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন জীবন
বাংলাদেশের জাতীয় চারুশিল্পী, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন — যিনি তুলির আঁচড়ে এঁকেছেন বাংলার মানুষ, মাটি ও জীবনের গল্প। 

বাংলাদেশের জাতীয় চারুশিল্পী জয়নুল আবেদিন (১৯১৪ – ১৯৭৬) ছিলেন বাংলাদেশের আধুনিক চিত্রকলার অন্যতম পথপ্রদর্শক ও জনক। তাঁকে প্রায়ই “বাংলাদেশের শিল্পাচার্য” বলা হয়।

নিচে তাঁর সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো —

জন্ম ও শিক্ষা:
জয়নুল আবেদিন ২৯ ডিসেম্বর ১৯১৪ সালে ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জের কেন্দুয়া থানার এক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি আঁকাআঁকিতে দক্ষ ছিলেন। পরে তিনি কলকাতা সরকারি আর্ট স্কুলে ভর্তি হয়ে চিত্রকলায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন এবং সেখান থেকেই ১৯৩৮ সালে প্রথম শ্রেণিতে পাশ করেন।

শিল্পজীবন:
জয়নুল আবেদিনের শিল্পজীবন শুরু হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে। তিনি মানুষের জীবনসংগ্রাম, দারিদ্র্য, বন্যা ও দুর্ভিক্ষের বাস্তব চিত্র অত্যন্ত জীবন্তভাবে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছেন। ১৯৪৩ সালের বাংলার দুর্ভিক্ষ নিয়ে আঁকা তাঁর “ফেমিন সিরিজ” বা “দুর্ভিক্ষ সিরিজ” আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয় এবং তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দেয়।

অবদান:
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে তিনি ঢাকায় চারু ও কারুকলা ইনস্টিটিউট (বর্তমান চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৪৮ সালে। এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের শিল্পচর্চার মূল ভিত্তি স্থাপন করে।

বিষয়বস্তু:
তাঁর ছবিতে গ্রামীণ জীবন, নদী, কৃষক, নৌকা, গরু, কাদা মাটি—এসবই বারবার উঠে এসেছে। তিনি সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, সংগ্রাম ও মানবিক আবেগকে শিল্পের ভাষায় প্রকাশ করেছেন।

সম্মাননা:
জয়নুল আবেদিন ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সরকারের “হিলাল-ই-ইমতিয়াজ” পদক পান এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশ তাঁকে “শিল্পাচার্য” উপাধিতে ভূষিত করে।

মৃত্যু:
তিনি ২৮ মে ১৯৭৬ সালে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

উত্তরাধিকার:
আজও তাঁর কাজ বাংলাদেশের চারুশিল্পের অনুপ্রেরণার উৎস। ময়মনসিংহে তাঁর নামে জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে তাঁর অমর সৃষ্টি সংরক্ষিত আছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন Please Share with your Friends

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url