RSC Fire Safety Manual – Appendix A ( কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর)

RSC Fire Safety Manual – Appendix A (কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর)
RSC Fire Safety Manual – Appendix A: কারখানার অগ্নি নিরাপত্তা সংক্রান্ত জরুরি প্রশ্নোত্তর

RSC Fire Safety Manual – Appendix A (কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর)

কারখানায় অগ্নি নিরাপত্তা (Fire Safety) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঠিক নিয়ম না মানলে মুহূর্তের মধ্যে ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। RSC (RMG Sustainability Council) কর্তৃক নির্ধারিত Fire Safety Manual – Appendix A-তে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ও প্রশ্নোত্তর রয়েছে, যা প্রতিটি ফ্যাক্টরির সেফটি টিমের জানা জরুরি।

নিচে কিছু সাধারণ কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো —

ফায়ার এক্সিট দরজা কি খোলা রাখা উচিত?

উত্তর: ❌ না, ফায়ার দরজা সবসময় বন্ধ রাখা উচিত।
ফায়ার দরজা এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে আগুন লাগলে ধোঁয়া ও আগুন অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে। এজন্য দরজায় স্বয়ংক্রিয় ক্লোজার (auto door closer)ল্যাচ থাকা বাধ্যতামূলক।

তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে, যদি দরজাটি খোলা রাখতে হয় (যেমন: মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্য), তাহলে ম্যাগনেটিক হোল্ড-ওপেন ডিভাইস ব্যবহার করা যেতে পারে।
👉 এই ডিভাইসটি ফায়ার অ্যালার্ম বাজলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দরজা বন্ধ করে দেবে।

⚠️ মনে রাখবেন — দরজায় পাথর, কাঠ, দড়ি বা অন্য কিছু দিয়ে ঠেকিয়ে খোলা রাখা একেবারেই নিষিদ্ধ। এতে জরুরি অবস্থায় দরজা বন্ধ হতে পারবে না, যা প্রাণহানির কারণ হতে পারে।

কারখানা চলাকালীন ফায়ার দরজা খোলা থাকবে না বন্ধ থাকবে?

উত্তর: দরজা সাধারণত বন্ধ রাখাই উত্তম।
কারখানা চলাকালীন অনেক সময় দরজা খোলা রাখার প্রয়োজন পড়ে, কিন্তু নিরাপত্তার কারণে দরজাটি খোলা রাখতে হলে অবশ্যই ফায়ার অ্যালার্ম সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত ম্যাগনেটিক হোল্ড-ওপেন ডিভাইস ব্যবহার করতে হবে।

এই ডিভাইস থাকলে ফায়ার অ্যালার্ম বাজলেই দরজাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
🚫 কখনোই দরজার নিচে কাঠ, দড়ি, পাথর ইত্যাদি দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। এতে আগুন লাগলে মানুষ বের হতে পারবে না বা ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়বে।

ফায়ার দরজার অনুমোদন কর্তৃপক্ষ ও সার্টিফিকেশন কীভাবে হবে?

উত্তর: ফায়ার দরজাটি অবশ্যই UL, FM বা অন্য কোনো স্বীকৃত তৃতীয় পক্ষের (Third Party) দ্বারা পরীক্ষিত ও সার্টিফাইড হতে হবে।
এই পরীক্ষাগুলো সাধারণত NFPA 252, BS 476 Part 22, EN 1364-1 ইত্যাদি আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে করা হয়।

দরজা ও ফ্রেমে স্থায়ী লেবেল থাকতে হবে, যাতে নিম্নোক্ত তথ্যগুলো স্পষ্টভাবে লেখা থাকবে:

  • প্রস্তুতকারকের নাম

  • মডেল নম্বর

  • ফায়ার রেটিং (যেমন ৯০ মিনিট, ১২০ মিনিট ইত্যাদি)

  • লিস্টিং এজেন্সির নাম

যদি দরজায় কাঁচ (Glass) থাকে, তবে সেটিকেও একই ফায়ার রেটিং অনুযায়ী তৈরি ও সার্টিফাইড হতে হবে।
হার্ডওয়্যার (hinges, lockset, closer) অংশগুলোও অবশ্যই ফায়ার রেটেড হতে হবে।

তৃতীয় পক্ষের সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে যে দরজাটি যথাযথভাবে পরীক্ষিত এবং মান বজায় রেখে তৈরি।

Reference: RSC Technical Guidelines (Standard) Part 4, Section 4.5.4

হাই-রাইজ ভবনের সব তলায় কি স্প্রিংকলার সিস্টেম আবশ্যক?

উত্তর: ✅ হ্যাঁ, আবশ্যক।
যদি কোনো ভবনের সর্বোচ্চ ব্যবহারযোগ্য তলার উচ্চতা ২৩ মিটার (৭৫ ফুট) বা তার বেশি হয়, তাহলে পুরো ভবনে NFPA 13 অনুযায়ী স্প্রিংকলার সিস্টেম থাকা বাধ্যতামূলক।

স্প্রিংকলার সিস্টেম আগুন লাগলে দ্রুত পানি ছিটিয়ে আগুনের বিস্তার রোধ করে। এটি হাই-রাইজ বিল্ডিংয়ের জন্য জীবনরক্ষাকারী ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত।

ভবনটি যদি হাই-রাইজ না হয়, তবে স্টোরেজ বা ওয়্যারহাউসে কি স্প্রিংকলার লাগবে?

উত্তর: না, RSC অনুযায়ী হাই-রাইজ না হলে স্প্রিংকলার আবশ্যক নয়।
তবে স্টোরেজ বা ওয়্যারহাউস অবশ্যই ফায়ার রেটেড দেয়াল দ্বারা আলাদা (compartmentalized) করতে হবে।

কিছু ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের স্থানীয় নিয়ম অনুসারে স্প্রিংকলার প্রয়োজন হতে পারে।

যদি আলাদা স্টোরেজ রুম তৈরি করা সম্ভব না হয়, তাহলে নিচের শর্তগুলো মানতে হবে:

  • 🔸 স্প্রিংকলার না থাকলে:

    • সর্বাধিক উচ্চতা: ২.৪ মিটার

    • সর্বাধিক এলাকা: ২৩ বর্গমিটার

  • 🔸 স্প্রিংকলার থাকলে:

এছাড়াও, অরক্ষিত (unprotected) দাহ্য মালামালের মধ্যে কমপক্ষে ৩ মিটার ফাঁকা দূরত্ব রাখতে হবে।

উপসংহার

RSC Fire Safety Manual অনুযায়ী প্রতিটি কারখানা ও ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা মানদণ্ড অনুসরণ করা আইনত ও নৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফায়ার দরজা, স্প্রিংকলার সিস্টেম, ও স্টোরেজ সেফটি সম্পর্কিত এসব প্রশ্নোত্তর জানা থাকলে, অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

প্রতিটি ফ্যাক্টরিতে নিয়মিত ফায়ার সেফটি ট্রেনিং, ড্রিল এবং ইন্সপেকশন পরিচালনা করা উচিত, যাতে সবাই জানে— কীভাবে জরুরি অবস্থায় নিরাপদে কাজ করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন Please Share with your Friends

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url